-->

বাড়িতে ত্বকের যত্ন নিয়ে কি কোরিয়ান গ্লাস স্কিন পাওয়া সম্ভব?

Pic-pexels

কে-ধারা বা কোরিয়ান ধারা রূপচর্চায় এখন দারুণ জনপ্রিয় | ত্বকের এমন এক বিশেষত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এই  কোরিয়ান ধারায় যাতে ত্বক মসৃণ হয় ও কাচের মতোই আলোর প্রতিফলন ঘটে ত্বকে | এই ত্বককেই ‘গ্লাস স্কিন’বলা হয় |তবে এসব মেকআপের কারসাজি নয় কিন্তু বরং এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় ত্বকের যত্ন | ত্বক যাতে ভেতর থেকে সতেজ ও আর্দ্র হয়ে ওঠে | ধৈর্য ধরে রোজ যত্ন নেওয়া জরুরি গ্লাস স্কিন পেতে | বিশেষ ফেসপ্যাকও লাগাতে হয় সপ্তাহে একবার |

একেক জনের ত্বক একেক রকম হয় জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে | জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে কোরিয়া বা চীনের মানুষদের ত্বকের ধরন আমাদের চেয়ে আলাদা হয় । প্রভাব থাকে আবহাওয়ারও | তাই বেশ মুশকিলই বটে পুরোপুরি তাঁদের মতো ‘লুক’পাওয়া | চাইলে তাঁদের যত্নআত্তির ধারাটা অনুসরণ করতে পারেন যদি তাঁদের কাছাকাছি ধরনের ত্বক পেতে চান | ত্বক মসৃণ ও সতেজ হবে এই নিয়মে যত্ন নিলে |

শারমিন কচি , বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের রূপবিশেষজ্ঞ এমনটাই বলছিলেন গ্লাস স্কিন পাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে | তাঁর কাছ থেকেই জেনে নিন কীভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে গ্লাস স্কিন পেতে |

1.ডাবল ক্লিনজিং

মিনিট পাঁচেক ধরে ত্বক পরিষ্কার করুন অয়েল বেজড ক্লিনজার দিয়ে | এরপর ত্বক মুছে নিন পানি না লাগিয়ে | এবার মুখ ধুয়ে ফেলুন ফোম বেজড কিংবা জেল বেজড ক্লিনজার প্রয়োগ করে | হাত দিয়ে অতিরিক্ত পানিটা সরিয়ে দিন | মুখেই শুকাতে দিন ত্বকে লেগে থাকা বাকি পানিটুকু |

2.টোনিং

এমন টোনার বেছে নিন যা ত্বক আর্দ্র রাখবে | বৃত্তাকার গতিতে পাঁচ-সাতবার ত্বক মালিশ করুন হাতের আঙুল বা তুলার বল দিয়ে | সরাসরি শসার রস কিংবা গোলাপজল প্রয়োগ করলেও তা টোনারের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে | তবেএমন টোনার কিনে নেওয়াই ভালো যা ত্বকে আর্দ্রতা দেবে |

3.এসেন্স প্রয়োগ

এই ধাপে সুদিং জেল কিংবা যেকোনো একটা এসেনশিয়াল অয়েল কিংবা অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করতে পারেন | চাইলে সমপরিমাণ গ্লিসারিনও যোগ করে নিতে পারেন অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে | ১৫-২০ মিনিট পর পানি কিংবা ভেজা রুমাল দিয়ে ত্বক মুছে নিন |

4.ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ

লোশন, সেরাম কিংবা ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম লাগিয়ে নিন | ভিটামিন ই এবং সি –সমৃদ্ধ পণ্য বেছে নেওয়া ভালো |


5.সূর্যরশ্মি থেকে সুরক্ষা

প্রচণ্ড গরমে, চুলার তাপে বা অতিরিক্ত আলোতে কাজ করতে হলে কিংবা বাইরে গেলে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন | তবে ময়েশ্চাইরাইজার লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই তা লাগানো যাবে না | চতুর্থ ধাপে ত্বকে ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজার মিশে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। চতুর্থ ধাপে যদি সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর আছে এমন ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করা হয় তবে পঞ্চম ধাপটি বাদ দিয়ে দিন। 

সাপ্তাহিক যত্ন

যেকোনো একবেলার জন্য রোজকার এসব ধাপ তো থাকবেই এর বাইরেও ভাতের মাড় প্রয়োজন হবে আপনার সাপ্তাহিক যত্নের জন্য | প্যাক তৈরির জন্য চুলায় জ্বাল দিয়ে নিন ভাতের মাড় | নামিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিন খুব ঘন হয়ে এলে | যদি চান সামান্য মধু যোগ করতে পারেন | প্যাক লাগানোর পর অপেক্ষা করুন শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত | এবার শুকিয়ে যাওয়া প্যাক পানি দিয়ে মালিশ করে করে সরিয়ে ফেলুন | 

ভাতের মাড়ের প্যাক সবেচেয়ে ভালো গ্লাস স্কিন পেতে | এর বদলে চাইলে অ্যারারুট আর কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিনের মিশ্রণ দিয়ে তৈরি প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন |



জিনগত কারণে সবার জন্য পুরোপুরি কোরিয়ান গ্লাস স্কিন পাওয়া সম্ভব হবে না | তা না হলেও এই সহজ পদ্ধতির চর্চায় সে রকমই ঝকঝকে ও সুন্দর ত্বক পেতে পারেন | রাখতে হবে, ত্বকের দাগছোপ দূর করতে হবে গ্লাস স্কিন পেতে হলে | কাজেই কারণ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে ত্বকে কোনো দাগ থাকলে|


Add your comment Hide comment