![]() |
লিচু খাওয়ার আগে সতর্ক হোন |
লিচু খাওয়ার আগে সতর্ক হোন! গরমে ভুল করলে হতে পারে বিষক্রিয়া
বাংলার গরমকালে লিচুর লালচে-মিষ্টি টান যেন হার মানায় অন্য সব ফলকে। কিন্তু এই রসালো ফলটি, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে, বিপদের কারণ হতে পারে যদি একটু অসাবধানতা হয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লিচু খাওয়ার সঙ্গে বিষক্রিয়া এমনকি মৃত্যুর সম্পর্কও থাকতে পারে। চলুন জেনে নিই কীভাবে এই প্রিয় ফলটি বিপদের কারণ হতে পারে এবং কেনার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।
লিচু থেকে বিষক্রিয়ার কারণ কী?
লিচুতে উপস্থিত থাকে একটি প্রাকৃতিক যৌগ "হাইপোগ্লাইসিন এ" (Hypoglycin A), যা অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হলে শরীরে শর্করার ঘাটতি ঘটায়। বিশেষ করে যদি খালি পেটে খাওয়া হয় বা শরীরে আগে থেকেই গ্লুকোজের ঘাটতি থাকে, তাহলে এই যৌগ মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে:
যাদের পুষ্টির অভাব আছে বা যারা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে এই বিষক্রিয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এই সমস্যা মূলত দেখা যায় লিচুর প্রধান উৎপাদনকারী এলাকায়, যেমন: মুজাফফরপুর, বিহার। তবে অন্যান্য জায়গাতেও এখন এই সমস্যা ধরা পড়ছে।
লিচু কেনার সময় কী দেখে নেবেন?
1. ফ্রেশ দেখাচ্ছে কি না:
অতিরিক্ত পুরনো বা বাদামি হয়ে যাওয়া লিচু এড়িয়ে চলুন।
2. ছাঁচ বা দাগ আছে কি না:
ছাঁচ পড়া বা কালো দাগযুক্ত লিচু না কেনাই ভালো।
3. রং অস্বাভাবিক কি না:
অত্যধিক উজ্জ্বল লাল রং প্রাকৃতিক না-ও হতে পারে। প্রাকৃতিক রঙের দিকেই নজর দিন।
4. স্থানীয় হকারের থেকে কিনছেন?
চেষ্টা করুন পরিচিত বা বিশ্বস্ত উৎস থেকে লিচু কেনার। রাস্তার ধারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিক্রি হওয়া লিচু খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
লিচু খাওয়ার সঠিক উপায়
* খালি পেটে লিচু খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
* লিচু খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
* অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া ঠিক নয়, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।
* লিচুর সঙ্গে কিছু প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন দুধ বা বাদাম খাওয়া যেতে পারে, যাতে গ্লুকোজ লেভেল কমে না যায়।
লক্ষণগুলি কী হতে পারে?
যদি লিচু খাওয়ার পর নিচের কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
* বমি
* দুর্বলতা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
* খিঁচুনি
* ঘাম বেশি হওয়া বা আচরণে অস্বাভাবিকতা
উপসংহার:
লিচু যেমন স্বাদে অনন্য, তেমনই এর কিছু গোপন বিপদও আছে। তাই এই গরমে লিচু খাওয়ার আনন্দ নিন ঠিকই, তবে সেই সঙ্গে সচেতন থাকুন। স্বাস্থ্য সচেতন পরিবার হিসেবে একটু সতর্কতা আপনাকে ও আপনার প্রিয়জনকে রাখতে পারে সুস্থ ও নিরাপদ।
0 comments:
Post a Comment