ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহার করুন প্রাকৃতিক চা-পাতা।

রূপচর্চার উপকরণ  চা 

চায়ে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, বি২ এবং আরও অনেক পুষ্টি উপাদান। তাই এটি পানীয় হিসেবেই নয়, রূপচর্চার উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

ত্বকের যত্নে

ত্বকের যত্নে সাধারণ চায়ের চেয়ে গ্রিন টির ব্যবহার বেশি হয় এবং এর উপকারও বেশি। গ্রিন টি ময়েশ্চারাইজার, ক্লিনজার বা সিরাম হিসেবে ত্বকে ব্যবহার করা যায়। সহজেই ঘরে বসে চা দিয়ে রূপচর্চা করতে পারেন।

বয়স্ক ত্বকে কোলাজেন কম থাকে, যার কারণে ত্বক কুঁচকে যায়। এই সমস্যার সমাধানে বাড়িতে তৈরি করা এই পেস্ট অত্যন্ত কার্যকরী। এতে ভাতের মাড় ১ চা-চামচ, গ্রিন–টি ১ চা-চামচ, মধু আধা চা-চামচ, পেস্ট করা ভাত ১ চা-চামচ, এবং গ্লিসারিন ২ ফোঁটা মিশে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। পরে আলতো হাতে ২-৩ মিনিট মালিশ করে তা ফেলতে হবে।

ত্বকে ব্রণ থাকলে টোনার হিসেবেও গ্রিন–টি ব্যবহার করা যেতে পারে। এক কাপ গ্রিন–টির সঙ্গে এক চা–চামচ পুদিনা পাতার রস মিশিয়ে নিন। এটি ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে, ফলে ত্বকে টান টান ভাব আসবে এবং বলিরেখা কিছুটা কমে যাবে। প্রতিদিন রাতে মুখ ধোয়ার পর এই টোনারটি চেহারায় স্প্রে করতে পারেন।

ব্রণযুক্ত ত্বকের জন্য আরেকটি পদ্ধতি হল সমপরিমাণ গ্রিন–টি এবং চন্দন বেটে নেওয়া। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এক দিন পরপর এক মাস এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।

এছাড়া, লিকার চাও ত্বকের টোনার হিসেবে ভালো কাজ করে।

গ্রিন-টি ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে আনে। এটি মাথার ত্বকের কোলাজেন বাড়াতেও সহায়তা করে। এছাড়া রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে, ব্যাকটেরিয়া ও খুশকি দূর করে।

গ্রিন-টির মাইল্ড স্ক্রাবার হিসেবেও সুনাম আছে। এটি গরমকালে ঘামাচির যন্ত্রণাও কমাতে সাহায্য করে। সমপরিমাণ গ্রিন-টি, পুদিনাপাতা এবং তুলসীপাতা মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন, তারপর ছেঁকে নিন। এই মিশ্রণটি স্প্রে বোতলে ভরে ব্যবহার করতে পারেন, এটি ঘামাচি কমাবে।

ঘুম থেকে ওঠার পর চোখে ফোলা ভাব থাকলে, দুটি কালো চায়ের টি-ব্যাগ ঠান্ডা পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে চোখের ওপর দিয়ে রাখুন। এতে ফোলা ভাব অনেকটাই কমে যাবে।

চুলের যত্নের জন্য

২৫০ মিলিলিটার পানিতে ১ চা-চামচ গ্রিন-টি মেশান। স্প্রে বোতলের মাধ্যমে এটি মাথার ত্বকে স্প্রে করুন, খেয়াল রাখুন যাতে চুলে না লাগে, কারণ তাতে চুল রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটি খুশকি এবং সব ধরনের ছত্রাকজনিত সমস্যার সমাধান দেবে। চুলে খুশকির জন্য, ৩ চা-চামচ গ্রিন-টি অল্প পানিতে ৪-৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন।100 মিলি নারকেল তেল দিয়ে গ্রিন টির জল শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত কম আঁচে সিদ্ধ করুন। পানি শুকিয়ে গেলে ছেঁকে নিয়ে কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করতে পারেন। তুলোর উল ব্যবহার করে মাথার ত্বকে লাগান। আপনি যদি চান, আপনি এটি 30 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে পারেন বা সারারাত রেখেও দিতে পারেন। এটি ছত্রাকের সংক্রমণও কমায়।

চা প্রায় সব ধরনের ত্বকের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। যাইহোক, এটি পিগমেন্টেড, রোদে পোড়া এবং ব্রণ-প্রবণ ত্বকের জন্য বেশি কার্যকর।

সবুজ চায়ে ভিটামিন ই, সি রয়েছে। ভিটামিন ই ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ভিটামিন সি ত্বকের তেল দূর করে। অতএব, ভিটামিনগুলি যাতে একে অপরের সাথে সংঘর্ষ না করে সেদিকে যত্ন নেওয়া উচিত। আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক হয় তবে ভিটামিন ই এর পরিমাণ কমানো ভাল। আপনার যদি শুষ্ক ত্বক থাকে তবে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ কমানো ভাল। আপনার প্যাক তৈরি পরিকল্পনা করার সময় এই বিষয়গুলি মাথায় রাখা উচিত।

সংবাদ সূত্র: প্রথম আলো




0 comments:

Post a Comment